image

রাজ্য / 11 June, 2025

ডিটারজেন্ট'‌-এর গুণেই সারল টিউমার, করতে হল না অস্ত্রোপচার, হাঁটতে না পারা ছেলে শুরু করল দৌড়ানো

জন্ম থেকেই ডান পায়ের পাতা ঘেঁষে ছিল লাল রঙের একটি টিউমার। বিহারের বাসিন্দা ওই শিশুটিকে দেখানো হয়েছিল পড়শি রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে। সুরাহা হয়নি। এরপর বয়স যতই গড়িয়েছে ততই আকারে বেড়েছে ওই টিউমার। বয়স যখন ৮ বছর তখন হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় স্কুলে যাওয়া।
অস্ত্রোপচার করে শেষপর্যন্ত কেটে ফেলতে হয় ওই টিউমার। বিহারেই হয় এই অস্ত্রোপচার।

কিন্তু সামান্য কয়েকটা দিন স্বস্তিতে কেটেছিল ওই ছেলেটির। ফের কয়েকদিন পরেই আবার নতুন করে গজিয়ে ওঠে টিউমার। আবার সেই হাঁটতে না পারার সমস্যা। বয়স যখন ১৩তে পৌঁছয় তখন এমন অবস্থা হয় যে যন্ত্রণায় ওই কিশোর আর মাটিতে পা ফেলতে পারছিল না। এবার আর বিহারে চিকিৎসা না করিয়ে সোজা কলকাতায় নিয়ে আসা হয় ওই কিশোরকে। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে দেখানোর পর নিয়ে আসা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে পরীক্ষার পর তাঁকে হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়। শেষ পর্যন্ত এই হাসপাতালেই হয় রোগীর যন্ত্রণার অবসান। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, '‌জ্ঞানের ফলিত প্রয়োগের মাধ্যমেই চিকিৎসা বিজ্ঞান এগিয়ে যায়।'‌

এবিষয়ে চর্মরোগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ রমেশচন্দ্র ঘরামির নেতৃত্বে চিকিৎসকরা ওই কিশোরকে পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় টিউমারের মধ্যে কোনও ক্যান্সার সেল-এর উপস্থিতি না পাওয়া গেলেও সমস্যা যে গুরুতর এবং এর ফলে যে ভবিষ্যতে এই কিশোর স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারবে না তা বুঝে যান চিকিৎসকরা।

ডাঃ রমেশচন্দ্র ঘরামি বলেন, '‌টিউমারটি হল এক্রিন অ্যাঞ্জিওমেটাস হামারটোমা। প্রাথমিকভাবে আমরা ঠিক করেছিলাম সার্জারি বিভাগে অস্ত্রোপচার করতে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় '‌স্ক্লেরোথেরাপি'‌ চালু করার। সেইমতো একটি বিশেষ '‌ডিটারজেন্ট'‌ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে টিউমারের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। যা টিউমারের গা ঘেঁষে যে সমস্ত রক্তবাহী নালী গিয়েছে তার দেওয়ালগুলি নষ্ট করে দেয়। ফলে টিউমার ছোট হতে থাকে। টানা এই চিকিৎসায় একসময় টিউমারটি ছোট হতে হতে একেবারে মিলিয়ে যায়। ফলে ওই কিশোরের আর অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হয় না। পা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।'‌ রোগীর পরিজন জানিয়েছেন, তাঁদের রোগী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। হাঁটাচলা তো সামান্য বিষয়। রোগী এখন দৌড়তেও পারছে। খুব তাড়াতাড়ি রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় প্রধান। তাঁর কথায়, '‌আশা করা যায় ওই টিউমার আর ফিরে আসবে না।'‌ যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি কৃতিত্ব দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও তাঁর বিভাগকে। তাঁর কথায়, '‌এই ধরনের চিকিৎসার সিদ্ধান্ত ছিল একটা সমবেত সিদ্ধান্ত। আমার একার কোনও কৃতিত্ব নেই।'‌

Recents

We are News your trusted source for in-depth, accurate, and timely digital news coverage, delivering breaking stories, insightful analysis, and engaging multimedia content across directly to your fingertips.

Our Contact

Email : biswabanglatvofficial@gmail.com
Contact : 8910451550
Whatsapp : 8910451550

© Biswabanglatv . All Rights Reserved. Developed By Maskin Web Solutions India Pvt. Ltd.